Monday, February 27, 2017

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন যে নির্মাতারা


প্রতিদিন খবরের পাতা খুললেই দেখা মেলে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির চিত্র। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারায়। সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের জাতীয় জীবনের একটি ভয়াবহ অভিশাপ। অনাকাঙ্খিত সড়ক দুর্ঘটনায় অকালে প্রাণ হারিয়েছে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের মধ্যে অনেকে।

কয়েকদিন আগে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ‘মাটির ময়না’ খ্যাত চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদের মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। এতে বাস চালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট নির্মিতব্য চলচ্চিত্র  ‘কাগজের ফুল’-এর শুটিং লোকেশন দেখে ঢাকায় ফেরার পথে মানিকগঞ্জের জোকা নামক স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদ এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত হন। শুধু তারেক মাসুদই নয় এর আগেও সিনেমার শুটিং লোকেশন দেখে ফেরার পথে মারা গিয়েছেন কয়েকজন গুণী নির্মাতা।

‘সাত ভাই চম্পা’ খ্যাত নির্মাতা দীলিপ সোম ১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিনেমার লোকেশন দেখতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। ‘তোমার জন্য ভালোবাসা’ শিরোনামের সিনেমার লোকেশন দেখে সিলেটে থেকে ফেরার পথে সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ তিনি।

তিনি চলচ্চিত্র নির্মাতা আলি মনসুরের সহকারী পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর তিনি খান আতা’র সহকারী পরিচালকের কাজ করেন। তার পরিচালিত প্রথম সিনেমা ‘সাত ভাই চম্পা’। এছাড়া তিনি ‘স্মৃতি তুমি বেদনা’, ‘আলো তুমি আলোয়’, ‘চিরদিনের সাথী’, ‘মহামিলন’সহ বেশ কিছু সিনেমা নির্মাণ করেছেন।

‘সীমানা পেরিয়ে’ খ্যাত নির্মাতা আলমগীর কবির ১৯৮৯ সালের ২০ জানুয়ারি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। বগুড়া জেলায় চলচ্চিত্র বিষয়ক একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ঢাকা ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

আলমগীর কবির ১৯৭৩ সালে নির্মাণ করেন মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘ধীরে বহে মেঘনা’। এরপর ১৯৭৫ সালে ‘সূর্য কন্যা’, ১৯৭৭ সালে ‘সীমানা পেরিয়ে’, ১৯৭৯ সালে ‘রূপালী সৈকতে’, ১৯৮২ সালে ‘মোহনা’ ১৯৮৪ সালে ‘পরিণীতা’ ১৯৮৫ সালে সপ্তম ও সর্বশেষ পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মহানায়ক’ নির্মাণ করেন তিনি। এছাড়াও নয়টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন এই নির্মাতা।

‘গহীনে শব্দ’খ্যাত নির্মাতা খালিদ মাহমুদ মিঠু। ২০১৬ সালে ৭ মার্চ রাস্তায় গাছ চাপা পড়ে নিহত হন। রাজধানীর ধানমন্ডির চার নম্বর রোড থেকে রিকশা যোগে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশের একটি গাছ তার রিক্সার উপর ভেঙে পড়ে। তারপর এ চলচ্চিত্র নির্মাতাকে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ‘গহীনে শব্দ’ চলচ্চিত্রটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। এ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান মিঠু। শ্রেষ্ঠ পরিচালকসহ চারটি বিভাগে ২০১০ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়।

0 comments:

Post a Comment

Copyright © 2015 মিডিয়া স্টারস
| Distributed By Gooyaabi Templates